পোস্টগুলি

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     অষ্টাবিংশ পর্ব : করণদেব বাঘেলা   ১২৯৯   আসাপল্লি (আহমেদাবাদ)-এর এই প্রাঙ্গণ তাঁর যৌবনের ক্রীড়াভূমি। একসময় কত লড়াই করেছেন এই প্রাঙ্গণে, অথচ আজ ভাগ্যদেবতা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করলেন। যে আশা এবং আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নিজের সমস্ত সৈন্যবলকে একত্রিত করে ওই হীন সুলতানকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন— তাতে বাদ সাধলেন খোদ দেবতা। প্রবল বৃষ্টিতে তাঁর বিপুল হস্তী-বাহিনী এক প্রকার নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। তাদের ব্যবহার করা গেল না। উলুঘ খাঁয়ের ভীষণ আক্রমণের সম্মুখে একে একে ভেঙে পড়ল তাঁর সমস্ত অবরোধ। দিল্লির এই সুলতান বড়ো সৌভাগ্যবান প্রতিবার এই একজন না একজন বিশ্বাসঘাতককে তিনি ঠিকই জুটিয়ে ফেলেন …   কয়েকমাস পূর্বে   পাটনের জঙ্গলের মধ্যে দিনেও কেউ খুব একটা প্রবেশ করেন না, এইদিকে রূপসুন্দরীর ভীষণ তাড়া। তাঁর পিতা অসুস্থ। যেভাবেই হোক তাঁকে গিয়ে পৌঁছোতে হবে। তাই গুটিকয় দেহরক্ষী আর নিজের দেওরকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। মন্ত্রী মাধব এই খবরের কিছুই জানলেন না। তিনি তখনও রাজধানীতে, দিল্লির সুলতানের ক্রম...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     সপ্তবিংশ পর্ব : রিভালবার রানি— প্রথম ভারতীয় মহিলা স্নাইপার   ১৬ নভেম্বর, ১৮৫৭   দাঁতে দাঁত চেপে এগোচ্ছিল দলটা। আর আধা ক্রোশ পথ, তার পরেই ঝড়ের মতো আছড়ে পড়তে হবে। এর মধ্যে কোনও ঝামেলা না-হলেই ভালো। ওইখানে ওরা কতজন আছে, কে জানে? হঠাৎ ভাবনা-চিন্তা ছিন্ন করে দিল একটা ভারী আওয়াজ— ঘ্রুউম...! লুটিয়ে পড়ল, দলের পুরোভাগে থাকা পতাকা-বহনকারী সৈনিকটি। মাথায় শিরস্ত্রাণ, তাই গলা লক্ষ্য করেই চালানো হয়েছে গুলি। একেবারে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়ে গেছে মাস্কেট-বল। নিচু হয়ে তাকে টানতে যেতেই, আবার গুলি— ঘ্রুউম...! ছিটকে ফেলে দিল শিরস্ত্রাণ। আর সাহস করল না কেউ। অসহায়ভাবে দেখল, বাতাসের জন্য খাবি খেতে খেতে স্থির হয়ে গেল বন্ধুটি! তার খোলা চোখে তখনও যন্ত্রণামাখা বিস্ময়! ঠিক কতজন আছে ওদিকে! এটা কি এমবুশ? এগোনোর সাহস হচ্ছিল না কারওর, ঝোপের আড়ালে কাঠ হয়ে বসে রইল তারা।   ***   গাছপালা আর বুনো ঝোপে ঢাকা সানকেন লেন। আড়াল পেতে কোনও অসুবিধাই হয়নি কোম্পানির সৈন্যদের। সেখানে বসেই বুঝল, সিকান্দার বাগের ভিতর...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     ষড়বিংশ পর্ব : সিয়াচেন— অপারেশন রাজীব   নিশ্চিন্তে বড়ো আরামে বসেছিল পাকিস্তানি সৈন্যদল। এই ভয়ানক দুর্যোগের মধ্যে ওই পাহাড়ি ইঁদুরগুলো তাদের আক্রমণ করার সাহস পাবে না। ঝকঝকে দিনেই যতবার উঠতে চেয়েছে ততবার টিপে মারা হয়েছে। আর আজকে তো ওঠার কোন প্রসঙ্গই আসে না। ওই নীচ থেকে এখন গুলি চালানোই সার। ও গুলি তাদের গায়েও লাগবে না, তাদের কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবে না। আরাম করে কম্বলে গা এলিয়ে দিয়ে নিজেদের মধ্যে রসিকতায় মেতে ওঠে তারা, “ভারত ভীরুর দেশ না হলে আজ তিন বছর ধরে সিয়াচেন দখল করে বসে আছে অথচ উপরে ওঠরা সাহস পাচ্ছে না! ওদের সেই দম-ই নেই। যখন ওরা উঠেছে, তখন ওটার জন্য হুড়পাড় লেগেছে। এরা বরাবরই এরকম, যা কিছু ওদের তা-ই ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য এদের বড়ো তাড়াহুড়ো। এইভাবেই কাশ্মীর, পাঞ্জাব, বাংলা সব নিজের করেছে... শালারা এঁটোখেকো...।” মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল, রাইফেলের বুলেট এসে ছিন্ন করল তার কণ্ঠদেশ। সঙ্গীরা রাইফেল তুলে নেয়ার আগেই ঝাঁঝরা হতে শুরু করল তারা। তাদের বিস্ময়ের রেশ তখনও কাটেনি। বাইরে ভয়াবহ তুষারঝড়, এমন সময় গোটা...