পোস্টগুলি

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     একবিংশ পর্ব : গুর্জর   ঘোড়ার পিঠে বসে খানিকটা নিশ্চিন্ত অনুভব করছিলেন হজাজ ইবনে ইউসুফ, যে সৈন্য তাদেরকে বাধা দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছে তা তাদের বিশাল সৈন্যবাহিনীর তুলনায় অর্ধেকেরও কম। আর তাদের বেশিরভাগেরই ঘোড়া নেই, পদাতিক বাহিনী। এরা আর কতটুকু আঘাত দেবে … ধুলো ছুটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তাঁর আরব-বাহিনী। এখনই আছড়ে পড়বে ওদের উপর। মুখের হাসি মুখেই রয়ে গেল। অশ্ব আর মানুষের আর্তনাদে মুখরিত হল রণ-প্রাঙ্গণ। চতুর্দিক ধুলোয় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে, ব্যাপারটা কী ঘটছে? বুঝে ওঠার আগেই লক্ষ লক্ষ অগ্নি-শলাকা এসে পড়ল সামনে। দাউদাউ করে জ্বলে উঠল সব। তীব্র ধোঁয়ায় ভীষণ থেকে ভীষণতর হল সৈন্যবাহিনীর আর্তনাদ। ইউসুফের কণ্ঠে ফুটে উঠল তীব্র ঘৃণা— বিশ্বাসঘাতক কাপুরুষ! নিজের অশ্বের পেটে জুতোর খোঁচা দিয়ে, তরোয়াল উঁচিয়ে যুদ্ধের আহ্বান দিলেন বটে। কিন্তু ততক্ষণে তার পিছনে কিছু ঘটে চলেছে। ধোঁয়ায় চতুর্দিক আচ্ছন্ন ছিল, তাই বুঝতে পারেননি এতক্ষণে। বুঝলেন— এই ভীষণ ধোঁয়ার মধ্যে থেকে পাহাড়ের গা বেয়ে হইহই করে নেমে আসছে অশ্বারোহী ...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     আবার কড়া রোদ আর বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন জয়সিংহ। এক বছর আগে এইরকমই কড়া রোদ আর বৃষ্টির মধ্যে শুরু হয়েছিল তাঁর দুর্গ আগলানো। বাবার ফেলে যাওয়া সৈন্যদেলকে একত্রিত করে মায়ের জওহরের কথা বলে তিনি নিজের সৈন্যদের উৎসাহিত করেছিলেন। ব্রাহ্মণাবাদের এই দুর্গনগরে দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো চেষ্টা করেছিলেন খলিফার বাহিনীকে আটকে রাখার। রেওয়ার গেছে যাক, অন্তত এই দুর্গনগরটুকু টিকে থাক— তা হলে এর পিছনে ছড়িয়ে থাকা বিস্তীর্ণ গ্রাম ও তাঁর স্বজাতিরা নিশ্চিন্ত থাকবে। কঠিন বাধাও দিয়েছিলেন। চতুর্দিকে প্রাকার পরিখা ঘেরা নগরটি যখন আটকে বসেছিল ওরা, তখন ভরা বর্ষা। তারপর শীত এল, রুক্ষ হাওয়া আর ধুলো-ঝড়ে ঢেকে গেল চতুর্দিক। আক্রমণের বহর স্থিমিত হয়েছিল কিন্তু গরম প ড় তেই আবার পূর্ণশক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ওরা। রাজা দাহিরের চারশত হাতি আছে, সুশিক্ষিত সৈন্যবাহিনী আছে। কিন্তু উল্টোদিকে খলিফা-বাহিনীর সামান্য যাযাবর সৈন্যদের ওই যে পাথর-ছোড়া যন্ত্রটা … ওইটাই তাদের কাল হল। তাদের মূল সুরক্ষা তাদের কেল্লার প্রাকার আর হস্তী বাহিনী। ওই নিক্ষিপ্ত পাথর কেল্লা...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     উনবিংশ পর্ব : বারবাঁকি কথা     দুর্দান্ত গরমে মাটির উপর থেকে ভাপ উঠছে। এলোমেলো হাওয়ায় উড়ে আসা বালুকণা তপ্ত দীপশলাকার মতো জ্বালিয়ে দিচ্ছে মুখের চামড়া। শিরস্ত্রাণ , বক্ষবন্ধনী , এসবের বাইরে যতটুকু জায়গা ফাঁকা আছে , সেখানে রুধির জমে আছে থপথপে হয়ে। কিন্তু তিনি সুহেলদেব। এত সহজে হার মানবেন না। দু’হাতে খণ্ডদু’টি আর-একবার ঘুরিয়ে নিয়ে বাহবার পেটে গুঁতো মারলেন। বাহবা তিরবেগে ছুটে চলল সম্মুখ বাহিনীর ফাঁকফোঁকর গলে … বাহবা আর তার পৃষ্ঠে রাজা সুহেল দেবকে ততক্ষণে ঘিরে নিয়েছে চার-পাঁচজনের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী দল। তারাও বুঝে গেছে , তাদের রাজার উদ্দেশ্য কী ? চারদিক থেকে পাঠানবাহিনী শেষবারের মতো একত্রিত হয়ে চেষ্টা করল বাধা দেওয়ার। দু’-একটি তির-বল্লম যে ছুটে এল না , তা নয় … বাহবার কোমরের কাছটা ছড়েও গেল। কিন্তু সে শিক্ষিত রণঅশ্ব। সেও বুঝে গেছে , তার প্রভু কী চায় … তার প্রভু যদি সফল হয় , তা হলে বিশ্রাম সেটুকু— এই মূকপশুও সেটা বুঝে নিল। লাগামের তীব্র টানে লাফিয়ে উঠল বাহবা। তারপরেই হাহাকার উঠল প...