পোস্টগুলি

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     কাশ্মীরের বরফঝড় , ১০১৫   বড়ো বড়ো পাথর গড়িয়ে পড়ছে পীরপাঞ্জলের গা বেয়ে। সেই সঙ্গে ভীষণ বরফের ঝড়। ঠোঁটের ক্ষণে হাসি ফুটল দুর্গাধিপতির। বরফের মতোই শীতল কণ্ঠে তিনি বললেন , “ এইবার সময় হয়েছে। আক্রমণ করো।” বরফের ঝড় সামলাতে বাইরের উপত্যকার মামুদের ছাউনিতে সবাই যখন ব্যতিব্যস্ত , ঘড়ঘড় শব্দে খুলে গেল লোহার সুবিশাল দরজাটা। দরজার জন্যেই এই দুর্গের নাম লোহাগড়। কাশ্মীরের গর্ব এই লৌহগড়। ছোটো ছোটো পাহাড়ি ঘোড়ায় চড়ে বেরিয়ে এল একশত সৈন্য। সুসংবদ্ধ , নিরেট তাদের বাহিনী। মুহূর্তের মধ্যে সাদা বরফ প্রান্তর ভিজে গেল লাল রক্তে। পাথরের বুকে তরবারি ঘষে আগুন জ্বালিয়ে তারা বলে গেল, তুঙ্গা কিচ্ছু ভোলে না। গজনির সুলতান মামুদ অজেয় নন , সঠিক হাতে পড়েননি এতদিন! সন্ধেবেলা জরুরি বৈঠক ডাকলেন গজনির সুলতান মামুদ। সুদীর্ঘ ন’মাস ধরে তাঁরা আটকে রেখেছেন লোহাগড়। কিন্তু এতটুকুও দাঁত ফোটাতে পারেননি। তির , ভারী প্রক্ষেপণ কেল্লার দরজায় আছড়ে পড়ে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেছে। কখনও কেল্লা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে তির ছুটে এসে তাঁদের বিদ্ধ ...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     পঞ্চদশ পর্ব : মরণপণ     দেহ শিবা বর মোহে ইহাউ , শুভ করমন তে কভুঁ না ডারোঁ। না ডরোঁ অর সো যব জায়ে লড়োঁ , নিশ্চয় কর আপনী জিত করোঁ। অর শিখ হো আপনে হি মন হউ , এহ লালচ হউ গুণ তউ উচারোঁ। যব আ ব কী অউধ নিধান বনাই , অত হি রান মৈ তখন জূঝ মরোঁ। ( গুরু গোবিন্দ সিং, বাণী ২৩১)   হে প্রভু , আমায় এই বর দাও— যেন কোনও শুভকর্ম থেকে কখনও বিরত না হই। শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে যেন ভয় না পাই। অটল বিশ্বাসে জয়ের পতাকা তুলি। শিষ্য হয়ে যেন সর্বদা তোমার গুণগান করি। আর যখন মৃত্যুর ক্ষণ আসবে , যেন যুদ্ধে লড়তে লড়তে অমর হই।   ভোরবেলা থপথপে হয়ে কুয়াশা জমে আছে চারদিকের পাহাড়তলিতে। আর ঠিক সেই সময় আনন্দ সাহেবের পাহাড়টা থরথরিয়ে কেঁপে উঠল , সহস্র সৈন্যের ঘোড়ার পদভারে। কেল্লার উপর থেকে সৈন্যরা তাকিয়ে দেখল, এবারে আক্রমণকারী সৈন্যসংখ্যা আগের বারের চেয়ে অনেক বেশি। তাদের শিরস্ত্রাণে সদ্য-উত্থিত সূর্য চমকাচ্ছে। অজস্র কালো এবং সবুজ পতাকায় খেয়ে গেছে তাদের দুর্গের চতুর্পার্শ্ব।   **...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     চতুর্দশ পর্ব : নাইকি দেবী   রক্তে মাখামাখি হয়ে তাঁবুতে প্রবেশ করলেন মহম্মদ ঘোরি। তাঁর ধাতব শিরস্ত্রাণে লেগে আছে শুকনো প্রদেশের রুক্ষ ধুলো। তাঁদের সবুজ পতাকার বর্ণ চেনা যায় না। বড়ো কঠিন সংগ্রাম হয়েছে আজ। সোজা পথে না এসে, বাঁকা পথে নেমে এসে যুদ্ধ করা বড়ো কঠিন ছিল। কিন্তু তাও উপরওয়ালার কৃপায় জয়ী হয়েছেন তিনি। এবারে বাজপাখির মতো ডানা মেলে নেমে যাওয়া যাবে ভারতবর্ষের উপর। ঠিক এই কারণেই এত পরিশ্রম। গজনীর সুলতানদের এড়িয়ে গিয়ে সাবধানে সন্তর্পনে ভারতবর্ষে প্রবেশের পথ খুঁজছিলেন তিনি। আশা করা যায় , খাইবার এবং বোলানে তানায়েত গজনী সৈন্যরা এটুকু বুঝেছে, তিনি তাদের আক্রমণ করতে চান না। তিনি যখন ভারতবর্ষ আক্রমণ করবেন, তারা নিশ্চয়ই পিছন থেকে তাঁকে আঘাত করবে না। তাদের মকসদ তো এক ও অভিন্ন; জিহাদ তথা সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ। ঘুরিদ-এর সিংহাসনে ধর্মপ্রাণ দুই ভাই রাজত্ব করত একত্রে। বড়োভাই গিয়াদের দায়িত্ব ছিল ঘুরিদ থেকে পশ্চিম প্রান্তের যতদূর অবধি সম্ভব ইসলামকে সম্প্রসারিত করা। অপরদিকে ছোটোভাই মহম্মদ ঘোরির ...