পোস্টগুলি

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     পঞ্চদশ পর্ব : মরণপণ     দেহ শিবা বর মোহে ইহাউ , শুভ করমন তে কভুঁ না ডারোঁ। না ডরোঁ অর সো যব জায়ে লড়োঁ , নিশ্চয় কর আপনী জিত করোঁ। অর শিখ হো আপনে হি মন হউ , এহ লালচ হউ গুণ তউ উচারোঁ। যব আ ব কী অউধ নিধান বনাই , অত হি রান মৈ তখন জূঝ মরোঁ। ( গুরু গোবিন্দ সিং, বাণী ২৩১)   হে প্রভু , আমায় এই বর দাও— যেন কোনও শুভকর্ম থেকে কখনও বিরত না হই। শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধে যেন ভয় না পাই। অটল বিশ্বাসে জয়ের পতাকা তুলি। শিষ্য হয়ে যেন সর্বদা তোমার গুণগান করি। আর যখন মৃত্যুর ক্ষণ আসবে , যেন যুদ্ধে লড়তে লড়তে অমর হই।   ভোরবেলা থপথপে হয়ে কুয়াশা জমে আছে চারদিকের পাহাড়তলিতে। আর ঠিক সেই সময় আনন্দ সাহেবের পাহাড়টা থরথরিয়ে কেঁপে উঠল , সহস্র সৈন্যের ঘোড়ার পদভারে। কেল্লার উপর থেকে সৈন্যরা তাকিয়ে দেখল, এবারে আক্রমণকারী সৈন্যসংখ্যা আগের বারের চেয়ে অনেক বেশি। তাদের শিরস্ত্রাণে সদ্য-উত্থিত সূর্য চমকাচ্ছে। অজস্র কালো এবং সবুজ পতাকায় খেয়ে গেছে তাদের দুর্গের চতুর্পার্শ্ব।   **...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     চতুর্দশ পর্ব : নাইকি দেবী   রক্তে মাখামাখি হয়ে তাঁবুতে প্রবেশ করলেন মহম্মদ ঘোরি। তাঁর ধাতব শিরস্ত্রাণে লেগে আছে শুকনো প্রদেশের রুক্ষ ধুলো। তাঁদের সবুজ পতাকার বর্ণ চেনা যায় না। বড়ো কঠিন সংগ্রাম হয়েছে আজ। সোজা পথে না এসে, বাঁকা পথে নেমে এসে যুদ্ধ করা বড়ো কঠিন ছিল। কিন্তু তাও উপরওয়ালার কৃপায় জয়ী হয়েছেন তিনি। এবারে বাজপাখির মতো ডানা মেলে নেমে যাওয়া যাবে ভারতবর্ষের উপর। ঠিক এই কারণেই এত পরিশ্রম। গজনীর সুলতানদের এড়িয়ে গিয়ে সাবধানে সন্তর্পনে ভারতবর্ষে প্রবেশের পথ খুঁজছিলেন তিনি। আশা করা যায় , খাইবার এবং বোলানে তানায়েত গজনী সৈন্যরা এটুকু বুঝেছে, তিনি তাদের আক্রমণ করতে চান না। তিনি যখন ভারতবর্ষ আক্রমণ করবেন, তারা নিশ্চয়ই পিছন থেকে তাঁকে আঘাত করবে না। তাদের মকসদ তো এক ও অভিন্ন; জিহাদ তথা সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ। ঘুরিদ-এর সিংহাসনে ধর্মপ্রাণ দুই ভাই রাজত্ব করত একত্রে। বড়োভাই গিয়াদের দায়িত্ব ছিল ঘুরিদ থেকে পশ্চিম প্রান্তের যতদূর অবধি সম্ভব ইসলামকে সম্প্রসারিত করা। অপরদিকে ছোটোভাই মহম্মদ ঘোরির ...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     ত্রয়োদশ পর্ব : মুষল-ধরা চুড়ি-পরা হাত   ডান দিক , বাম দিক ; যেদিকে চোখ যায় একই দৃশ্য , থেঁতলে যাওয়া মৃতদেহের সারি— ভয়ে , বিস্ময়ে হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন কাহালে , এই কি তার স্ত্রী! ঢেঁকির মুষল হাতে ফুঁসছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর হাতের চুড়ি , সোনার বালা তুবড়ে গেছে তরবারির আঘাতে। তবুও আঘাত করে চলেছেন , নির্দিষ্ট নিরবচ্ছিন্ন ছন্দে … যেন ভর হয়েছে মারিআম্মানের , তাঁর কাছে যেতেই ভয় করছে এখন। অবশ্য সুযোগ পেলেন না , গর্ত দিয়ে মুখ বাড়িয়েছেন আর-একটি বীরপুঙ্গব। দক্ষিণ তোরণের বিপদ ঘণ্টাটা বাজিয়ে তরোয়াল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন কাহালে; যে-করে হোক এদের আটকাতেই হবে। সেদিন এক অসম্ভব লড়াই লড়েছিলেন কাহালে আর তাঁর স্ত্রী! এমন লড়াইয়ের নজির সম্ভবত ইতিহাসে আর একটিও নেই। একটি শীর্ণপথের দায়িত্ব নিয়ে তথাকথিত অস্ত্র ছাড়া স্বামী-স্ত্রী লড়াই করেছিলেন এবং থামিয়ে দিয়েছিলেন প্রায় একটি গোটা রেজিমেন্টকে। আসুন, একটু পিছনে হেঁটে, সেই মহান দম্পতির প্রেক্ষাপট জানি।   ***   রাজা মাদাকারি নায়াকা , কেল্লাশহর চিত্রদুর্...