পোস্টগুলি

জুন, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     পর্ব ৫ : যদি হও সুজন   চৈত্রের খর রৌদ্রের মধ্যে দাঁড়িয়ে রইলেন ক্ষত্রবধূ, তাঁর স্থির বিশ্বাস তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাত ধরে নিয়ে যাবেন আপন গৃহে। একজন ক্ষত্রিয় কখনও আপন কথার বরখেলাপ করে না। এক প্রহর, দুই প্রহর, বেলা গড়িয়ে যায় অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হয় না। অবশেষে ধুলোর ঝড় দেখা যায় পূর্ব দিকে, থর থর করে কাঁপছে মাটি! নিশ্চয়ই তার ঘোড়া সওয়ারের দল আসছে, তিনি আসছেন! অধীর আগ্রহে পালকিতে কান পেতে রইলেন নববধূ! ক্রমশ মন্দীভূত হয়ে আসে ঘোড়ার খুরের আওয়াজ। অনেক কণ্ঠ ভেসে আসছে, কিন্তু সে আওয়াজ...   ***   খান্ডেলা আর চাপোলির সেই সীমান্তে চিতা জ্বলল। হাহাকার করে উঠল সমবেত নরনারী। তারা কাতর অনুনয় করতে লাগল, মাটিতে পড়ে আকুলি বিকুলি করতে লাগল, যেন একটিবার তাদের কথা ওই নতুন বউ শোনে... মৃদু হেসে নতুন বউ পরম মমতায় আঁকড়ে ধরলেন তাঁর স্বামীর দেহখানি, ঠিক যেমন ফুলশয্যায় পরম আগ্রহে পরস্পর পরস্পরকে আঁকড়ে ধরে, ঠিক তেমনি আগ্রহ ফুটে উঠল তার মুখে। নিজের ঘোমট...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
  রানি দুর্গাবতী প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     পর্ব ৪ : মা দুর্গা   “ওঁক...” চিৎকারটা শুনেই হাতিটাকে আড়াল করে পিছনে ঘুরল মাহুত। একখানা তির এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছে সওয়ারির কান! মাথা চাপড়ে হায় হায় করে উঠল সে , “মা , তুমি, তুমি হাতি থেকে নেমে যাও। অন্য কাউকে তোমার জায়গা দাও। ওরা শ্রমণকে চিহ্নিত করেছে! সব তির আমাদের লক্ষ করেই ছোড়া হচ্ছে।” আঘাত প্রাথমিক সামলে ক্ষীণ অথচ স্পষ্ট স্বরে বললেন সওয়ারি, “যুদ্ধ করতে এসে ফেরার পথ থাকে কি ? তিরন্দাজদের লক্ষ করো। আরও একটু সামনে নিয়ে চলো শ্রমণকে। ওদেরকে পেড়ে ফেলা অবধি আমার পতন নেই...” মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল আর একখানি তির এসে আমূল বিদ্ধ হল সওয়ারির কণ্ঠে! জ্ঞান হারাতে হারাতে দেখলেন তাঁর ছত্রভঙ্গ সেনাদল , পাশের হাতিতে প্রাণপণে লড়ে যাওয়া পুত্র নারায়ণ... নারায়ণ চিৎকার করছে , “মা আ আ...” আর শুনতে পেলেন না। চোখ বুজে এল তাঁর।   *** আগের বছর (১৫৬১-এর বর্ষা), চৌরগড়   প্রাসাদশেষে চিন্তিতমুখে দাঁড়িয়ে আছেন রানি দুর্গা। নজর দূরে জঙ্গলের দিকে। বর্ষার মেঘগর্জনের মতোই দূর থেকে এই ঘন ঘন ...

প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর

ছবি
                                প্রতিরোধে বীর ভারত - সন্তান   তমোঘ্ন নস্কর     রাণা হামির পর্ব ৩ : রাণা হামির   “তোমার দাদা-সা শেষবারের মতো সারঙ-কে চুমু খেয়ে তার পিঠটা চাপড়ে দিল। সারঙ বাপু-সা’র কথা সব বুঝত, সে বুঝতে পারল, প্রভুর সঙ্গে এ-ই তার শেষ দেখা। আমাকে পিঠে নিয়ে দৌড় দিল।” “ততক্ষণে আমার ভাইয়েরা পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে। তারপর শুরু হল সেই ভীষণ লড়াই... আমার সম্মুখেই রাওয়াল রতন সিংয়ের তখন পতন হল।” “আমি চলে যেতে যেতে দেখলাম, বাপু-সা’র মাথা কেটে নিল ওরা। মুণ্ডহীন ধড়টা কাঁপতে কাঁপতে দু’হাতে খণ্ড চালাল দু’বার, তারপর ঢলে পড়ল আমার ভাইদের উপর। কুদারুর গ্রামে এসে জানলাম, রানা লক্ষ্মণ সিংহ আর আটটি বীর পুত্রের পতন হয়েছে...” “তা হলে তুমি ফিরে গেলে না কেন কাকা-সা?” “ওদের সৎকার কর্ম করতে হত তো...” “বাপু-সা আর আমার আট ভাই সৌগন্ধ নিয়েছিল যে... আমি তো লড়তে চেয়েছিলাম শেষ শ্বাস অবধি। ভীষণ লড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাপ্পা রাওয়ালের সেই মহান রক্তধারা শেষ চিহ্নটুকু বজায়...