প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান - তমোঘ্ন নস্কর
প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান
তমোঘ্ন নস্কর
পর্ব ৫: যদি হও সুজন
চৈত্রের খর রৌদ্রের মধ্যে দাঁড়িয়ে রইলেন
ক্ষত্রবধূ, তাঁর স্থির বিশ্বাস তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গে দেখা
করবেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাত ধরে নিয়ে যাবেন আপন
গৃহে। একজন ক্ষত্রিয় কখনও আপন কথার বরখেলাপ করে না।
এক প্রহর, দুই প্রহর, বেলা গড়িয়ে যায়
অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হয় না। অবশেষে ধুলোর ঝড় দেখা যায় পূর্ব দিকে, থর থর করে কাঁপছে
মাটি! নিশ্চয়ই তার ঘোড়া সওয়ারের দল আসছে, তিনি আসছেন!
অধীর আগ্রহে পালকিতে কান পেতে রইলেন নববধূ!
ক্রমশ মন্দীভূত হয়ে আসে ঘোড়ার খুরের আওয়াজ। অনেক কণ্ঠ ভেসে
আসছে, কিন্তু সে আওয়াজ...
***
খান্ডেলা আর চাপোলির সেই সীমান্তে চিতা জ্বলল। হাহাকার করে উঠল সমবেত নরনারী।
তারা কাতর অনুনয় করতে লাগল, মাটিতে পড়ে আকুলি বিকুলি করতে লাগল, যেন একটিবার তাদের
কথা ওই নতুন বউ শোনে...
মৃদু হেসে নতুন বউ পরম মমতায় আঁকড়ে ধরলেন
তাঁর স্বামীর দেহখানি, ঠিক যেমন ফুলশয্যায় পরম আগ্রহে পরস্পর পরস্পরকে আঁকড়ে ধরে,
ঠিক তেমনি আগ্রহ ফুটে উঠল তার মুখে। নিজের ঘোমটা আর-একটু টেনে নিয়ে সবার থেকে নিজেকে
আড়াল করলেন নববধূ। লেলিহান শিখা সঙ্গত দিয়ে আড়াল করল দম্পতির বাসর!
ভাবছেন কোন নতুন কাহিনি
শোনাতে এলাম!
ভারতবর্ষ বীরপ্রসবিনী। ভারতবর্ষের প্রতিটি
ধূলিকণায় মিশে আছে অজস্র ত্যাগ আর আত্মবলিদানের কাহিনি। কিছু
আলো পেয়েছে আর কিছু রয়ে গেছে অন্ধকারে।
সেই সকল কথাদের ঘাঁটতে গিয়ে পাওয়া গেল
৩৫০ বছর আগের এক যোদ্ধা রাজপুত ঠাকুর সুজন সিং শিখাওয়াতের কাহিনি।
যিনি মানুষ থেকে লৌকিক দেবত্বে উন্নীত হয়েছিলেন কেবলমাত্র তাঁর ত্যাগ ও বলিদানের জন্য!
এ কাহিনি সেই অভূতপূর্ব গাথাকেই শরণ ও স্মরণ করে...
বিক্রম সংবৎ, ১৭৩৫/১৬৭৯ চৈত্র
চাপলির দিকে যাচ্ছে দলটি। দলের মাঝামাঝি
গোটা দুই রঙিন পালকি। আর তার মধ্যে ভারী সুন্দর করে সাজানো একখানা লাল পালকি। এক ঝলক
দেখলেই বোঝা যায় ওই পালকিতে দুরুদুরু বক্ষে নতুন সংসার পাততে চলেছেন এক নববধূ। পাশেপাশে
ঘোড়ায় চড়ে টগবগে এক তরুণ, দীর্ঘক্ষণ এই রৌদ্র থেকে চেহারাখানা খানিক ম্লান। কিন্তু
তাঁর মুখের হাসি স্বতঃস্ফূর্ত। বোঝাই যায় এই নব পরিণীত বর।
সঙ্গী বুড়ো থেকে আধবুড়ো, জোয়ান থেকে
তরুণ। হাসি-গানে, উচ্ছলতায় মুখরিত হচ্ছে শেষবেলার বিকালটা। দলের সম্মুখভাগে রয়েছেন
এক বৃদ্ধ। তিনি এই বরের পিতৃব্য ঠাকুর বিক্রম সিং শেখাওয়াত, ভ্রাতস্পুত্র সুজন সিংহকে
বিয়ে দিয়ে নিয়ে চলেছেন গ্রাম চাপোলিতে...
১৬৭৯ এক অভিশপ্ত সময়, আওরঙ্গজেবের সমরনায়ক
দারাব খানকে নিযুক্তই করা হয়েছিল লুটপাটের জন্য! দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ বিদ্রোহের যে
বিপুল খরচ হয়েছে সেই খরচা ওঠানোর জন্যই তার নিযুক্তিকরণ। শাহেনশাহ আওরঙ্গজেবের কাঁধে
প্রথম ভরসার হাত তিনিই ছিলেন যে...
দারাব খান দিল্লি থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম
পথের সমস্ত দেউল ও নগরী একের পর এক ধ্বংস করতে করতে এগিয়ে চলেছিলেন।
***
দলটা থেমে গেল কয়েকজন ভীত মানুষকে দেখে!
সম্ভ্রান্ত বৈশ্য, রাজপুত সর্দার, সাধারণ গৃহস্থ সবাই আছে সে-দলে। কিন্তু এমন ধারা
সংসার সমেত তারা চলেছে কোথায়... বধূর পালকির পাশ থেকে এগিয়ে গেলেন কৌতূহলী সুজন সিংহ।
দলের বৃদ্ধ রাজপুত সর্দারের কণ্ঠে ত্রাস
দেখলেন সুজন। দরাবের হস্তিবাহিনী একের পর এক নগর, দেবদেউল গুঁড়িয়ে এগিয়ে আসছে। পথের
দু’ধারে কেবলই ধ্বংসস্তূপ। হুঁশ ফেরে সুজনের...
এতদিন বিবাহের চিন্তায় মশগুল ছিলেন।
তার মধ্যে কখন যে নরপিশাচরা রাজপুতনায় হানা দিয়েছে জানতেই পারেননি। যখন বুঝতে পেরেছেন
ততক্ষণে প্রায় সব শেষ!
দারাব খানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী অনেকখানি
গভীরে চলে এসেছে। এখন খান্ডেলার সম্মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।
খান্ডেলা কেল্লা-নগরীর মোহনজির মন্দির তাদের লক্ষ্য। গুটিকয়েক
রাজপুত রক্ষী সেই বিশাল সেনাবাহিনীর সম্মুখে দাঁড়ানোর সাহস করে না, তাই আগেভাগেই পরিবারগুলো
পালিয়ে যাচ্ছে। নগর রাজপুতশূন্য। কেবল বৃদ্ধ পুরোহিত আর গুটিকয় সহায় সম্বলহীন আহির-গুর্জর
রাখাল রয়ে গেছে। পুরোহিত ইষ্টকে আর রাখালরা অদৃষ্টকে ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছে!
***
বল বল বাহুর বল
ভরসন্ধ্যায় পঞ্চাশজন ঘোড়সওয়ার যখন খান্ডেলার আর নগরীতে প্রবেশ করল, প্রাণবন্ত নগরীখানা জ্বরো রোগীর
মতো থরথরিয়ে কাঁপছে। গুটিকয় লোকজন কোথায় আড়াল নেবে, সেই ভয়েই ব্যস্ত। কেবল মন্দিরের
পুরোহিত সাহস করে সিংহদুয়ার আগলে রইলেন।
শনৈঃ শনৈঃ অগ্রসর হয় দল আর পুরোহিত দাঁতে দাঁত চেপে
মাধব রাম স্মরণ করেন!
আশ্চর্য ব্যাপার তারা মন্দির আক্রমণ করল
না! উল্টে ঘোড়া থেকে নেমে প্রণাম করল পুরোহিত এবং মন্দিরকে।
মন্দিরের প্রজ্জ্বলিত দীপশিখায় স্পষ্ট হল আগন্তুকের
মুখ, সুজন সিং শেখাওয়াত! আশ্চর্য! এই ছোঁড়ার তো বিবাহ ছিল! এ চাপোলি থেকে এখানে কেন!
আসন্ন আশঙ্কায় থরথর করে কেঁপে উঠলেন বৃদ্ধ পুরোহিত! মৃদু হেসে পদপ্রান্তে অস্ত্র রেখে
সুজন সিং বললেন, “মৃত্যুকে ভয় পাওয়া যে ক্ষত্রিয় ধর্ম নয় সে তো আপনিই শিখিয়েছেন!” সবিস্তারে বললেন তাঁর আগমনের হেতু।
***
পলায়ন পর বৃদ্ধ সর্দারের মুখে খান্ডেলার
কাহিনি শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সুজন সিং, কোনওমতেই বিনা
যুদ্ধে মোহনজির মন্দির ধ্বংস হতে দেওয়া যায় না।
হাঁ-হাঁ করে উঠেছিল তার সঙ্গে থাকা মানুষজন।
তারা সংখ্যায় মাত্র সত্তর জন তাও সবাই যোদ্ধা নয়, রাজপুত হিসাবে অস্ত্র ধরতে পারে,
এই যা...।
সুবিশাল এবং আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত মুঘলবাহিনীর বিপক্ষে তাদের কাছে অস্ত্র বলতে খণ্ড, ভল্ল, ধনুক আর
পথের দস্যু, হিংস্র পশু তাড়ানোর নিমিত্ত কম দূরত্বের কিছু হাওদা বন্দুক। এই দিয়ে
কি সুবিশাল বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করা যায়? ওই বৃদ্ধ সর্দার
নিজেই বলছেন কমপক্ষে তিন হাজার লোক নিয়ে দারাব আক্রমণ করে। কিন্তু সুজন সিং ক্ষত্রিয়
ধর্মে অটল। নাছোড় সুজনকে শান্ত করতে এগিয়ে আসেন বৃদ্ধ পিতব্য, “বেশ আমার দায়িত্ব
তোমাদেরকে গৃহে নিয়ে আসার, তুমি বধূকে নিয়ে ঘরে যাও। আমি যুদ্ধে যাব। শেখাওয়াত-কুলের
নিয়ম— বর বিনা বধূ ঘরে যেতে পারবে না।”
সুজন তবুও অটল রইলেন তার সিদ্ধান্তে।
যা কখনও হয়নি, রাজপুত জাতি তাই দেখল! সুজন নববধূর পালকি সম্মুখে
দাঁড়িয়ে তার সম্মতি প্রার্থনা করলেন! নববধূও বুঝেছিলেন, এ লাজের সময় নয়। মানুষটার
সঙ্গে এই হয়তো প্রথম আর শেষ কথা। তাই অবরোধ সরিয়ে বলেছিলেন,
“ক্ষাত্রধর্ম আগে। আমি নগরের প্রান্তে তোমার জন্য অপেক্ষা করব।”
কথা দিলেন নবপরিণীত স্বামী, “আমি আসবই...!”
কুড়িজন সৈন্য নিয়ে পিতৃব্য চললেন আপন
গ্রাম চাপোলির দিকে, পুত্রবধূকে নির্বিঘ্নে নিয়ে যেতে হবে। আর পঞ্চাশজন ঘোড়সওয়ার
নিয়ে সুজন সিং উপস্থিত হলেন খন্ডেলায়...!
***
১৬৭৯, ৮ মার্চ
তিনশত যোদ্ধা পিঠে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়ালেন
নগরের দ্বারপ্রান্তে। আড়াল করে রইলেন মোহনজির মন্দির। বালার্ক
আশীর্বাদ করল তাদের শিরস্ত্রাণ, বক্ষে ছুঁয়ে দিল অগ্নি তাপ...!
হ্যাঁ তিনশত! মানুষকে জানানোর জন্য এক
আশ্চর্য পন্থা গ্রহণ করেছিলেন সুজন সিং। রাত্রে মোহনজির মন্দিরে নাম সংকীর্তনের আয়োজন
করেছিলেন। আসলে নামের মাধ্যমে তিনি এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন যে, এই নগর অবরোধের
জন্য তিনি এসেছেন। আশেপাশের গ্রামে যত বীর শেখাওয়াত রাজপুত রয়েছেন, তাদের উচিত অস্ত্র
ধরা। সেভাবেই খোঁজ পেয়ে আড়াইশত রাজপুত যোদ্ধা এসে পৌঁছেছিল নগরে।
সুবিশাল মুঘলবাহিনী
আর সম্মুখে মাত্র তিনশত! দরাব আশ্চর্য হয়ে গেলেন তাদের ধৃষ্টতায়। বুঝলেন— এ
কোনও সৈন্যদল নয়, ভিন্নবয়স্ক কয়েকজন মানুষ প্রাণপণে লড়াই দিতে চাইছে।
তাচ্ছিল্যভরে বার্তা পাঠালেন তিনি— যদি
তারা নতজানু হয়ে প্রাণ ভিক্ষা চায় তবে ভেবে দেখবেন। কেবল মন্দিরের দু’টি স্তম্ভের
কাণা ভেঙে ও সোনার মোহনমূর্তিটি নিয়ে চলে যাবে। সঙ্গে অল্প
কিছু গোসম্পদ... রাজি থাকলে নারী ও পুরুষরা রক্ষা পাবে।
বার্তাবাহকের বাক্য শেষ হল না তার আগেই
একটি ভল্ল এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিল তার কণ্ঠ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই
ভীম বেগে ঝাঁপিয়ে পড়ল সেই তিনশত রাজপুত। তাদের হস্তধৃত খণ্ড যেন সাক্ষাৎ ইন্দ্রের
বজ্র। ভীষণ গর্জনে ছারখার করে দিতে লাগল তারকাসুরের বাহিনী।
সে এক ভীষণ সংগ্রাম। ক্রমশই কোণঠাসা হয়ে
পড়তে লাগল মুঘলবাহিনী। সংখ্যায় তারা ত্রিসহস্র কিন্তু তাদের
ব্যূহ বারবার ভেদ করে ফেলতে লাগল এই তিনশত যোদ্ধা! এ দিকে সম্মুখভাগের নায়কের মুণ্ডিত
মস্তক ভল্লের ডগায় গেঁথে ফেলে প্রদর্শন করছে রাজপুতদল। এই ঔদ্ধত্য সহ্য করলেন না দারাব
খান। প্রাজ্ঞ সমরনায়ক বুঝলেন, এরপর বাড়তে দিলে সৈন্যবাহিনীর মনোবল ভাঙবে।
ভারী হাওদা অগ্নিবর্ষণ শুরু করল। একের
পর এক ভূমি নিলেন তিনশত যোদ্ধা। কিন্তু তখনও লড়ে চলেছে সুজন সিং। দারাবের হুকুম হল—
সুজনের মস্তক চাই তার, তার সেনানায়কের মস্তক নিয়েছে সে। ক্রমাগত রক্তস্রাবে ক্লান্ত
ও ক্ষতবিক্ষত সুজন সিংকে পিছন থেকে আক্রমণ করে তার মস্তক ছেদন করল মুঘলরা!
বাইশ বছরের সুজন, অথচ তাকে হত্যা করতে আটজনকে ব্যূহ
গড়ে ঘিরে ধরতে হয়েছিল!
***
শেষ দেখা
সুজন সিংয়ের মুণ্ডহীন দেহটা ঘোড়ার উপরে
লুটিয়ে পড়তেই অভিজ্ঞ ঘোড়া তার প্রভুর হুকুম তামিল করেছিল। প্রভুর দেহ নিয়ে নগরদ্বার
পেরিয়ে সে ছুটে চলেছিল চাপোলির দিকে। তার প্রভু তাকে তেমনি আদেশ করে রেখেছিলেন যে...!
এমনতর দৃশ্য দেখে আশেপাশের গ্রাম থেকে লোকজন পিছুপিছু বুক চাপড়ে ছুটে এসেছিল। হায়রে
বীর বালক, যখন সে বীরের মতো ডাক দিল তখন আসেনি মানুষ, আর এখন মৃত্যুর পর শতসহস্র মানুষ
এল শোকের তরে...!
সেই ঘোড়াকে থামালেন নববধূ। তারপর...!
সেই দিনই সেই চিতাকে অক্ষয় করা হয়েছিল
মন্দির গড়ে। আজও খান্ডেলা ও চাপোলির সীমানায় পাশাপাশি দু’টি
মন্দির দেখা যায়— সর্দার সুজন সিং ঠাকুর শেখাওয়াত আর তাঁর স্ত্রী সতীদেবীর মন্দির।
তাঁর এই ত্যাগ তাঁকে লৌকিক দেবতা ঝুনজারিজির অবতার হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিল। মানুষ চোখের
জলে প্লাবিত করল মারোয়াড়ের রুক্ষ প্রান্তর, সবুজ দেখা দিল তাতে।
রুক্ষ পুবালি বাতাস খান্ডেলার মোহনজির মন্দিরের দিকে যাওয়ার
আগে, প্রান্তের এই ছোট্ট মন্দিরদ্বারে মাথা ঠুকে অনুমতি নেয়। ঢং করে ঘণ্টাধ্বনি ওঠে,
অনুমতি দেন তরুণ ঘোড়সাওয়ার সুজন সিং শেখাওয়াত।
আজও নব দম্পতিরা যান এই মহান শাশ্বত দম্পতির আশীর্বাদ
নিয়ে জীবন শুরু করতে…!
প্রতিরোধে বীর ভারত-সন্তান ধারাবাহিকটির আগের পর্বগুলি পড়ুন:
প্রথম পর্ব: https://blogs.antareep.in/2025/06/blog-post.html
দ্বিতীয় পর্ব: https://blogs.antareep.in/2025/06/blog-post_13.html
তৃতীয় পর্ব: https://blogs.antareep.in/2025/06/blog-post_20.html
চতুর্থ পর্ব: https://blogs.antareep.in/2025/06/blog-post_24.html
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন